ব্রেকিং নিউজ :
স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় বৃদ্ধি অপরিহার্য: বক্তারা রোকেয়া পদকজয়ীদের প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক : মেডিকেল বোর্ড জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার যে কোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সকল রাজনৈতিক দল মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন সন্তানদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন পরিচালনার অঙ্গীকার: সিইসি দেশ কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করেছে : মির্জা ফখরুল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত
  • প্রকাশিত : ২০২১-০১-২৭
  • ৬৪৩ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

সিরাজগঞ্জের ঊল্লাপাড়ায় ১৯২২সালের ২৭ জানুয়ারি। দিনটি ছিলো শুক্রবার। তৎকালিন পাবনা জেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ এবং উল্লাপাড়া থানার ত্রিমোহনী এলাকা বলে পরিচিত সলঙ্গা হাট।

আজ ৯৯ বছর পর একথা অনেকের কাছে নতুন ও বিস্ময়কর মনে হতে পারে। এটা স্বাভাবিক কারণ তৎকালিন সেদিন পাবনা জেলা বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গার হাটের যে গণ বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ড ঘটেছিল তা নিয়ে কিছু লেখা।

মুসলিম অধ্যূষিত এই এলাকায় কংগ্রেসের কর্মী তারুণ্যের অহংকার বিকাশমান প্রতিভা মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

এই আন্দোলনে তাঁর সাথে কাজ করছিলেন ৩শত সেচ্ছাসেবী কংগ্রেসের কর্মী। তাঁরা জাতীয়তাবাদে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

এই সময় পাবনার তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আর,এন দাস সিরাজগঞ্জ মহাকুমা কর্মকর্তা এস কে সিনহা এবং পাবনা জেলা বৃটিশ পুলিশ সুপারসহ ৪০ জন সশস্ত্র পুলিশ নিয়ে এই হাটে উপস্থিত হয়।

তরুন বিপ্লবী নেতা মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ সলঙ্গা হাটে অবস্থিত অস্থায়ী কংগ্রেস অফিসে ছিলেন। তাঁকে ওখান থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার উপর অমানুষিক পুলিশী নির্যাতন চলানো হয়।

জনতা বিপ্লবী তর্কবাগীশ কে পুলিশের বেষ্টনী থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মারমুখী দাঙ্গা পুলিশের কারনে সে সময় বেশী সুবিধা করতে পারেনি। আহত পুলিশ সুপারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে মদ গাঁজার ব্যবসায়ীরা পুলিশ সুপারের চিকিৎসাকালীন সময়ে লক্ষ্য জনতা বিপ্লবী তর্কবাগীশকে মুক্ত করার জন্য তিন দিগ থেকে এগিয়ে আসেন।

মুসলমান এই বীররা ছিলেন নিরস্ত্র।কিন্তু বুকে ছিলো স্বাধীনতার চেতনা।

পুলিশ মদের দোকানের কাছে অবস্থান নেয় এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আন্দোলনকারী এবং সাধারণ হাটুুরে জনতার উপর গুলীবর্ষণ করে।

এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডে প্রায় সাড়ে চার হাজার লোক নিহত হয় (সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী)

বেসরকারি হিসাবে হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশী বলে জানা যায় , সলঙ্গা হাটে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্পে গুলীবিদ্ধ আহতদের ছয় মাস চিকিৎসা করা হয়। অন্যন্য আহতরা বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা হাসপাতাল চিকিৎসা করায়। এখানে কতজন মারা গেছে তার কোন সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। প্রাণ ভয়ে পালাতে গিয়ে গুলীবিদ্ধ আহতদের কতজন মারা গেছে তারও কোন হিসাব নাই।

পুলিশের গুলীতে হাটে এতো গরু-মহিষের,ছাগল মারা যায় যে তার সংখ্যা নির্ণয় করা যায়নি। এসব জীব, জানোয়ারের শবদেহ আর নিহত মা।নুষের লাশ মিলেমিশে হয়ে গিয়েছিল একাকার। এর চেয়ে করুণ, এর চেয়ে নৃশংস ও মর্মান্তিক দৃশ্য পৃথিবীতে আর একটিও হয়নি।


মাওলানা তর্কবাগীশ তাঁর স্মৃতি কথায় লিখেছেন, গুলীবিদ্ধ হয়ে তাঁর সামনে সাতজন নিহত হয়। এদের মধ্যে তিন জনের নাম উল্লখ করা হলো ঃ উল্লাপাড়ার চাঁদ উল্লাহ, আরজ উল্লাহ ও রাজ আলী । নাম ঠিকানা জানতে পেরেছি।


৪০ জন পুলিশের মধ্যে ৩৯ জন গুলী চালায়। একজন বিহারী ক্ষত্রীয় হিন্দু গুলী না চালিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। ( তার উত্তর ছিল হাম তো আদমী কো মারনে আয়া।মায় গাও কাশি (গো হত্যা)নেহি কার সাকতা ও হামারা মাতা হ্যায়।)

অবিরাম গুলীবর্ষণে পুলিশের গুলী শেষ হয়ে যাওয়ায় ঐক্যবদ্ধভাবে জনতা লাঠি বল্লম নিয়ে চারদিকে থেকে এগিয়ে আসে।

তারা তর্কবাগীশকে মুক্ত এবং হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নিতে চায়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশকে মুক্তি দেয়।

বিপ্লবী তর্কবাগীশ জনতাকে শান্ত হতে আহ্বান করেন। এই আহবানের জনগণ শান্ত হবার ফলে বৃটিশ সরকারের পুলিশ সুপার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও ৪০ জন পুলিশের প্রাণ রক্ষা পায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat