ব্রেকিং নিউজ :
স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রিক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বয় বৃদ্ধি অপরিহার্য: বক্তারা রোকেয়া পদকজয়ীদের প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাবে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক : মেডিকেল বোর্ড জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার যে কোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সকল রাজনৈতিক দল মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন সন্তানদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন পরিচালনার অঙ্গীকার: সিইসি দেশ কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করেছে : মির্জা ফখরুল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৬-০৪
  • ২৩৪৩৫৭৫ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী চা-এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় চা পাতা বাল্কে বিক্রি না করে এর মূল্য সংযোজন করতে সংশ্লি দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মানুষের রুচি এখন বদলে গেছে। বিভিন্ন ধরনের চা এখন পাওয়া যায়। সুগন্ধি চা তৈরি করুন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্বাদের চায়ের চাহিদা এখন অনেক বেশি। চা উৎপাদনের পাশাপাশি এদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপন এবং জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪’ প্রধান উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষের রুচির পরিবর্তন ঘটায় এখন বিভিন্ন ধরনের চা পাওয়া যাচ্ছে। হারবাল টি, ‘মসলা টি’ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্য ‘অ্যারোমা টি’ উৎপাদন করা প্রয়োজন। কারণ, বিভিন্ন অ্যারোমা চায়ের কদর অনেক বেশি। তাছাড়া তুলসি, আদা, লেবু, তেজপাতা, এলাচ,লং, দারুচিনি প্রভৃতির সাহায্যে আমরা যে চা বানাই সে চা’টাও প্যাকেটজাত করা যায়।
সরকার প্রধান বলেন, আমি যারা চা মালিক এবং ব্যবসায়ীগণ রয়েছেন তাদেরকে বিশেষ করে মালিকদের বলবো আপনারা ভ্যালু এ্যাডেড করেন। বাল্কে চা বিক্রীর পরিবর্তে যদি ভ্যালু এ্যডেড করেন তাহলে আপনারা ভাল দাম পাবেন। উপার্জন করতে পারবেন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এবং বিশ্বব্যাপী এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাট পাতা থেকে চা তৈরীতে গবেষণা চলছে এবং সীমিত আকারে উৎপাদন হচ্ছে। এটি নিয়ে আরো গবেষণা করে এর উৎকর্ষ সাধন প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা’কে বহুমুখি করা এবং অ্যারোমা টি তৈরি করা, যেটার চাহিদা বিদেশে এখন অনেক বেশি। তাই সেদিকেই আমাদের নজর দেওয়া দরকার। চা পাতা শুধু বাল্কে বিক্রি না করে ভ্রালু এ্যডেড করে সেটা আমরা রপ্তানি করবো। এতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্র অর্জনের পাশাপাশি উৎপাদকদেরও ভাল উপার্জন হবে।
তাঁর সরকারের সারাদেশে বিদ্যুতায়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির উল্লেখ করে বলেন, এখন গ্রাম গঞ্জের মানুষ অনেক বেশি তথ্য পান। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও রাত ১১টা ১২টা পর্যন্ত সমাজ, রাজনীতি,অর্থনীতি ও বিশ্ব পরিস্থিতির আলোচনায় চায়ের কাপে ঝড় ওঠে।
তিনি বলেন, চা’য়ের কাপে এই ঝড় দিন দিন বাড়ছে কাজেই চা’য়ের চাহিদাও বাড়ছে। সেজন্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। আর এটা করার জন্য যা যা করার দরকার অবশ্যই আমরা তা করবো। আপনাদের সবরকম সহযোগিতা করবো সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি শ্রমিকদের প্রতি আরো যত্নবান হওয়ার এবং তাদের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়াসহ তাদের সন্তান-সন্ততিদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য চা বাগানের স্কুলগুলোর উন্নয়নে মালিকপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চা বাগানে প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরো অনেকেই রয়েছেন। কাজেই তাদের জীবন মান উন্নত করা, আর্থিক দিক দেখা, ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত দেখা কিন্তু মালিকদের দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, ‘অভিভাবকের মত আপনারা সেটা দেখবেন, আমরা সেটাই চাই’। পাশাপাশি চা শ্রমিকরা আর ভাসমান থাকবে না, সে বিষয়টিও দেখার দায়িত্ব আমাদের।
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি ও শ্রমিকদের মাঝে ৮টি ক্যাটাগরিতে ‘জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৪’ প্রদান করেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম উদ্দিন, চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে চা শিল্পের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে চা মেলারও উদ্বোধন করেন এবং পরে বঙ্গবন্ধু কর্নার এবং চা মেলা পরিদর্শন করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগদান করে বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেন। সেই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সরকার ২০২১ সাল থেকে জাতিয় চা দিবস পালন শুরু করে আসছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে চতুর্থবারের মত এবছর ‘জাতীয় চা দিবস-২০২৪’ উদযাপন হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মালিকদের প্রতি বলেন, চা শ্রমিকদের প্রতি যত্নবান হলে তাদের থেকে বেশি কাজ আদায় করিয়ে নিতে পারবেন। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসাসহ নানা বিষয় দেখবেন। চা শ্রমিকদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন জাতির পিতা। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই, আপন ভূমি নেই। আমরা তাদের সেই মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেবো। কেউ ভূমিহীন, গৃহহীন থাকবে না। আমাদের পরিষ্কার কথা।
শেখ হাসিনা বলেন, চা আমার খুব প্রিয়। আমি চা পান করি। কারণ, জাতির পিতা চা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। আর বিশেষ করে, চা শ্রমিকরা নৌকায় ভোট দেন। অনেকে অনেকভাবে চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাদের অন্য দিকে নিতে পারে নাই। তাদের ভালোবাসা ও আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।
সরকার প্রধান বলেন, উত্তরাঞ্চল চায়ের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেটাকে সম্প্রসারণ এবং যতœ করা, কীভাবে আরো চা উৎপাদন বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া চা বোর্ড, ক্ষুদ্র চাষিদের প্রযুক্তি সহায়তা, প্রণোদনা, সবদিক থেকে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। পঞ্চগড়ের পাশাপাশি লালমনিরহাটেও চা বোর্ডের স্থায়ী অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, পঞ্চগড়ে আঙ্গিনায়ও চা হচ্ছে। তারা তরকারিও ফলায়, চায়ের গাছও লাগায়। আমাদের অর্থকরী ফসল হচ্ছে চা। যেটা দেশের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে সহায়তা করছে। চায়ের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার চা উৎপাদনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ২০২৩ সালে রেকর্ড ১০২ দশমিক ৯২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের উত্তরবঙ্গে চা চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরফলে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর এবং রংপুর জেলায় চা চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat