ব্রেকিং নিউজ :
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান মিশন ডিসেম্বরের শুরুর দিকে রিপোর্ট চূড়ান্ত করবেন : ফলকার টুর্ক সায়েমা ওয়াজেদ ‘নিষ্ক্রিয়’ হওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে সরাসরি কাজ করবে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় ঢাকায় এসেছে থাইল্যান্ডের চিকিৎসকদল সাতক্ষীরায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে বিনা লাভের দোকান চাঁদপুরের বীজ, সার ও নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ শহিদ সাংবাদিকদের পরিবার ও আহতদের পাশে থাকবে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট : নাহিদ ইসলাম যত দ্রুত সম্ভব গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন : মির্জা ফখরুল দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া শুরু হবে : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংস্কার হতে হবে টেকসই, যেন আপত্তিকর চর্চার পুনরাবৃত্তি না হয় : ফলকার
  • প্রকাশিত : ২০২৩-০৯-২৫
  • ২৮৮ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল  প্রতিনিধি : নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিতব্য সেতুর নকশায় ত্রুটির কারণে নির্মাণ ব্যয় বেড়ে ৬৫ কোটি টাকা থেকে দাঁড়িয়েছে ১৩৬ কোটি টাকা। এ সেতুর নির্মাণ শুরু হয় ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে। কাজ ২০১৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন ষষ্ঠবারের মতো ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে সময়।  (গত ৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতু প্রকল্পের নকশা প্রণয়নে দুর্বলতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নকশার দুর্বলতার কারণে সেতুর নিচ দিয়ে নৌ চলাচল বিঘ্নিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বৈঠকে সেতুটির জন্য নতুন করে আরও ৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করে একনেক।
কালিয়া উপজেলায় প্রায় ২৩১টি গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বিশেষ করে জেলা সদরের সঙ্গে কালিয়া উপজেলার সরাসরি যোগাযোগের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। কালিয়া উপজেলাকে নড়াইল জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে উপজেলার বারইপাড়া এলাকার এই নবগঙ্গা নদী। জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় উপজেলার মানুষদের। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বারইপাড়া ঘাট দিয়ে নদী পার হয়ে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, হাসপাতালে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াত করে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এখানে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্প-কলকারখানা। এলাকায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য শহরে আনতে চরম দুর্ভোগে পড়েন। এছাড়া এলাকায় কোনো সমস্যা হলে পুলিশ যথাসময়ে ঘটনাস্থলে আসতে পারে না, আগুন লাগলে দমকল বাহিনী ও জরুরি রোগী পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত পৌঁছাতে পারে না। ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মেসার্স এমডি জামিল ইকবাল অ্যান্ড মো. মইনুদ্দীন বাঁশি জেভি ফার্ম এ সেতুর কার্যাদেশ পায়। ৬৫১.৮৩ মিটার দীর্ঘ এবং ১০.২৫ মিটার প্রস্থের সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৬৫ কোটি ৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কিন্তু ওই বছরের জুনে নকশায় জটিলতা ধরা পড়ায় কাজ কয়েক মাস বন্ধ থাকে।
এ ছাড়া নকশা অনুযায়ী, বর্ষাকালে যদি নদীতে পানির উচ্চতা অতিমাত্রায় বাড়ে তাহলে প্লাবিত হতে পারে সেতুর দুই পাশের পিলার। সে কারণে সেতুর শুরু ও শেষের অংশ অর্থাৎ দুই প্রান্তই তিন মিটার করে উঁচু করা প্রয়োজন। তবে সেতুর মাঝখানের উচ্চতা আগের নকশা অনুযায়ীই হবে। নকশা সংশোধনের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রায় ছয় মাস পর তা অনুমোদন পেলে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। তবে ২০২০ সালের ২০ জুন ও পরের বছর ৬ সেপ্টেম্বর বালু বোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় মাঝ নদীতে অবস্থিত সেতুর নির্মাণাধীন ৯ নম্বর পিলার আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হেলে পড়ে।
নড়াইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আশরাফুজ্জামান বলেন, ৯ নম্বর পিলারটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ভেঙে যাওয়ায় এটি না রেখে ৮ ও ১০ নম্বর পিলারের ওপর কংক্রিটের ঢালাই না দিয়ে নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে ৮৬ মিটার লম্বা স্টিলের একটি স্প্যান বিদেশ থেকে এনে বসাতে হবে। বর্ষাকালে এই অংশে পানি থেকে সেতুর উচ্চতা থাকবে ২৭ ফুট। এ ছাড়া সেতুর অন্যান্য অংশ দিয়ে ছোট নৌযান চলাচল করবে, সেটা সাইনবোর্ডে লিখে দেওয়া থাকবে। তিনি আরও বলেন, সেতুর পিলারগুলো যাতে নৌযান দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সে জন্য প্রতিটি পিলারের চারদিকে স্টিলের বেষ্টনি দিয়ে তৈরি করা হবে নিরাপত্তা বলয়। এ জন্য স্প্যানের পেছনে ৪০ কোটি টাকা এবং পিলারের নিরাপত্তার জন্য বাকি অর্থ ব্যয় হবে। বাড়তি ৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও নতুন করে টেন্ডার, কার্যাদেশসহ আনুষঙ্গিক কাজ করতে আরও তিন-চার মাস সময় লাগবে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের জুনে সেতুর নির্মাণ শেষ হবে। তবে সেতুর দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কসহ বাকি কাজ এ বছরের জুনে সম্পন্ন হয়েছে।
নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি (এমপি) বলেন, আমলাদের অদক্ষতা ও অসচেতনতার কারণে নকশায় ত্রুটি হয়েছে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হলো। আশার কথা, জটিলতা কেটে গেছে। এখন দ্রুত সেতুর কাজ শেষ করলে লাখ লাখ মানুষের যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত হবে। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat