ইসরাইল ইরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর পর, সোমবার জাতিসংঘের এক বৈঠকে দেশ দু’টি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বিনষ্ট করার অভিযোগ আনে।
১ অক্টোবর ইসরাইলের ওপর তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে শনিবার ইসরাইল ইরানের সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ইরান-সমর্থিত নেতৃবৃন্দ ও একজন বিপ্লবী গার্ড কমান্ডারকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইরান হামলাটি চালিয়েছিল। ইরানের আহ্বানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এ বৈঠক বসে। এ সময় ইরান ও ইসরাইল উভয়ই তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে বলে জানিয়েছে। জাতিসংঘ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি একথা জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরাভানি কাউন্সিলকে বলেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আগ্রাসন সুস্পষ্ট ও অবিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ আক্রমণ ইসরাইলের আগ্রাসনের একটি বড় ও সুস্পষ্ট নিদর্শন এবং অনিয়ন্ত্রিত দায়মুক্তির অংশ, যার ফলে ইসরাইল গোটা অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে চলেছে।’ তিনি বলেন, ইসরাইলের ‘আন্তর্জাতিক আইনের ক্রমাগত ও নিয়মতান্ত্রিক লঙ্ঘন’ এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চল, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসনের জন্য কাউন্সিলের ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে দেশটির প্রতি নিন্দা’ জানানো উচিত। রাষ্ট্রদূত ইসরাইলের বিমান হামলার পর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ইরানের হুমকির পুনরাবৃত্তি করলেও, তেহরান কূটনীতি পছন্দ করে বলে উল্লেখ করেন।
ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, তার দেশ ১ অক্টোবর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আত্মরক্ষা করেছে। তিনি বলেন,‘আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, তাদের হামলার জবাব দেওয়া হবে।’ ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইরান মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসের বীজ বপন করেছে। কিন্তু এই সহিংসতা শুধু ইসরাইলের সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।’ ড্যানন ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ থেকে বিরত রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এ সময় তার মিত্র ইসরাইলকে সমর্থন করে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘ইরানের জন্য আমাদের বার্তাটিও পরিষ্কার। তারা যদি এ অঞ্চলে ইসরাইল বা মার্কিন কর্মীদের বিরুদ্ধে আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তবে এর মারাত্মক পরিণতি হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মরক্ষায় কাজ করতে দ্বিধা করব না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা এড়াতে চায়।’