বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম- মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে সেটি অবশ্যই নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হতে হবে এবং কোনো প্রকার অপকর্মে জড়িত বা রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশাসনে রাখা যাবে না।
আজ বুধবার নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাজনীতিক ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্টই হলো নির্দলীয়। যদি প্রশাসনে কোনোভাবে কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তাদের রাখা যাবে না, কারণ সেখানে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা বা দলীয় পরিচয়ের লোকদের থাকার কোনো কারণ নেই।’
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে যারা নানা অপকর্মে জড়িয়েছে এবং যারা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাদের রেখে স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
রিজভী বলেন, ‘এরা গোপনে ছিলেন না- অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছেন। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আদালত-আইনি প্রক্রিয়া ও সাম্প্রতিক কিছু সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তারমূলক আদেশের প্রসঙ্গেও সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায়। আইনি প্রক্রিয়ায় যা হওয়ার তা হবে- যারা অপরাধী তাদের বিচার হোক; কিন্তু কোনো রকম অসংশোধিত হস্তক্ষেপ হওয়া উচিত নয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তাদের প্রমাণ করতে হবে যে তারা অভিযোগহীন; আর যদি আদালত তাদের দায়ী প্রমাণ করে, তাহলে তারা আদালতের নির্ধারিত শাস্তি ভোগ করবে - আইনের চোখে সবাই সমান।’
রিজভী বলেন, জুলাই সনদ স্মরণীয়- সেটি মোটামুটি সবাই মেনে নিয়েছে এবং সেখানে থাকা অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হবে।
দেশের প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলীয়করণের মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনেক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা দেশের ভেতরে থাকতে না পেরে দেশ ছেড়ে প্রবাসে চলে গেছেন।
তিনি বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হয়তো ভাবতেন তাদের জমিদারি সারাজীবন থাকবে; কিন্তু ৫ আগস্টের পর অনেকের মানসিকতা বদলে গেছে, তবু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।’
রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষণা অনুযায়ী ক্ষমতায় এলে দল ২৫ কোটি বৃক্ষরোপণসহ পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের লক্ষ্য ও আইনি প্রক্রিয়ার সম্মান বজায় রাখার ওপর জোর দেন।