ব্রেকিং নিউজ :
বিজয়া দশমীতে ছাত্রদল নেতার ভিন্নধর্মী কর্মসূচি সুনামগঞ্জে সুরমা নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন ভোলায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ১১২টি পূজামন্ডপের প্রতিমা বিসর্জন বরিশালে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা কাপ্তাই হ্রদে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটিতে শেষ হল দুর্গোৎসব বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি রাত ৯টায় উপকূল অতিক্রম করতে পারে গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা : ধর্ম উপদেষ্টা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় দুর্গোৎসব বিমানবন্দরে দুর্ব্যবহার এনসিপির নেতাকর্মীদের, সংবাদ সম্মেলন বর্জন সাংবাদিকদের রাশিয়া থেকে তেল ক্রয়কারী দেশগুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখার প্রতিশ্রুতি জি৭ মন্ত্রীদের
  • প্রকাশিত : ২০২৩-১২-১০
  • ৩৪৭৪৮ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল নানা আয়োজনে মুক্ত দিবস পালিত। ১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করে নড়াইলকে মুক্ত করেছিলেন।
এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে নড়াইলের তৎকালীন এসডিও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, এমএনএ খন্দকার আব্দুল হাফিজ, আওয়ামী লীগ নেতা এখলাছ উদ্দিন, বিএম মতিয়ার রহমান লোহাগড়া হাইস্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিশাল দল নিয়ে যশোর অভিমুখে যান। (৬ এপ্রিল) সকালে পাক হানাদার বাহিনী দুটি জেট বিমান থেকে নড়াইল শহরে মেশিনগানের গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে। এতে নড়াইলের প্রচুর ক্ষতি হয় এবং শহর জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে। ১৩ এপ্রিল হানাদার বাহিনীর একটি দল নড়াইল শহরের চৌরাস্তায় রেস্টুরেন্ট মালিক মন্টুকে গুলি করে আহত করে এবং হরিপদ সরদার, ভাটিয়া গ্রামের কালু বোস, সরসপুর গ্রামের প্রফুল্ল মিত্রকে ধরে নিয়ে দাইতলা পুলের কাছে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। পাকিস্তানি বাহিনী ২৩ মে ইতনা গ্রামে ঢুকে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। সেদিন ওই গ্রামের ১৯ নারী-পুরুষকে হত্যা করে। নির্বিচারে হত্যার পাশাপাশি বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটতরাজ করে।
পরে মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলে ঢুকে লোহাগড়া থানা পাক হানাদার বাহিনীকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ না করায় ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিতভাবে তিন দিক থেকে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করেন। প্রচন্ড যুদ্ধের পর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এদিন লোহাগড়া শত্রুমুক্ত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলের হানাদার বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

৭ ডিসেম্বর এস এম ফজলুর রহমান জিন্নাহর নেতৃত্বে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণে মাছিমদিয়া গ্রামে সমবেত হয়ে পুলিশ-রাজাকারদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় লোহাগড়ার জয়পুরের মিজানুর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনার পর ৯ ডিসেম্বর কমান্ডার ফজলুর রহমান জিন্নাহ,শেখ আজিবর রহমান, আমির হোসেন, উজির আলী, শরীফ হুমায়ুন কবীর, আব্দুল হাই বিশ্বাসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমান নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ চালায়। পাল্টা আক্রমণে মো. নজির হোসেন মোল্যার নেতৃত্বাধীন বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। 
ওই দিনই শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত ৪০ জন পাকিস্তান মিলিটারিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা চতুর্দিক থেকে প্রচন্ড হামলা চলান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়।  
তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা সারা রাত শহরে বিজয় উল্লাস করতে থাকেন ও জয় বাংলা শ্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে তোলেন। ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে নড়াইলকে পাকিস্তান হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দিনব্যাপী জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন, র‌্যালি, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, ৭১ এর বধ্যভূমি, গণকবর ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যাল ও প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ বিশেষ মোনাজাত, আলোচনা সভা, এনভায়রনমেন্টাল থিয়েটার (মুক্তিযুদ্ধের মহড়া) এবং জারী গানের আয়োজন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ড কাউন্সিল, নড়াইল প্রেসক্লাব, পানি উন্নয়ন বোর্ড. গনপূর্ত বিভাগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ সরকারি-বেসরকারি দফতর, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, ৭১ এর বধ্যভূমি, গণকবর ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যালে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এ সব অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডঃ সুবাস চন্দ্র বোস,পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, স্থানীয় সরকার বিভাগ, নড়াইলের উপ-পরিচালক জুলিয়া শুকায়না, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) শাশ্বতী শীল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম কবির, বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম বাকী, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডঃ আলমগীর সিদ্দিকী,বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ আজিবর রহমান,শরীফ হমাউন কবীর,এস এ মতিন, শরীফ আবদুল্লাহেল বাকী,সাইফুর রহমান হিলু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিবিদ, আইনজীবি, সাংস্কৃতিক কর্মিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat