সড়ক নিরাপত্তা ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আজ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপিত হয়েছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বুধবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে সড়ক ভবনের অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় হাতিরঝিল থেকে সড়ক ভবন পর্যন্ত শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, সংস্থা, এনজিও, সুশীল সমাজ ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটে ও মারাত্মক আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৪ থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় একযুগে সারাদেশে ৬৭ হাজার ৮৯০টি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২৬ জন নিহত হয়েছেন। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন আরো বেশি। এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ চালক, যাত্রী ও পথচারীদের অসেচতনতা ও চালকদের অদক্ষতা। একারণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদযাপিত হয় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস।
দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে সড়ক ভবন, জাহাঙ্গীর গেইট থেকে ফার্মগেট, মহাখালী-আমতলী থেকে কাকলী মোড় এবং তেজগাঁও সাতরাস্তার মোড় পর্যন্ত রাস্তার দ্বীপসমূহ আলোকসজ্জা ও ব্যানারে সজ্জিত করা হয়। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বাস টার্মিনালে জনসচেতনতামূলক লিফলেট, পোস্টার ও স্টিকার বিতরণ করা হয়।
এছাড়া, দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রচার এবং মোবাইল ফোনে বিটিআরসির মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা (এসএমএস) প্রচার করা হয়।
মূল অনুষ্ঠানে বিআরটিএ কর্তৃক নির্বাচিত ১৬ জন দক্ষ পেশাদার মোটরযান চালককে নিরাপদ গাড়ি চালনার স্বীকৃতিস্বরূপ সেরা চালকের সনদপত্র প্রদান করা হয়। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় র্যালি, আলোচনা সভা এবং সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়।
দিবসের পরবর্তী এক মাসের মধ্যে ঢাকা শহরের ১০টি এবং জেলা পর্যায়ে পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসের এক সপ্তাহব্যাপী পেশাজীবী গাড়ি চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান চলাকালীন দেশের বিভিন্ন দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে ২৮টি হেলমেট বিতরণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে চালকদের মাঝে মোট ১০ হাজার হেলমেট বিতরণ করা হচ্ছে।